ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে পণ্য ক্রয় করা আধুনিক প্রযুক্তি বিশ্বের অন্যতম অবদান। সারা বিশ্বের মত বর্তমানে বাংলাদেশেও ই কমার্স বিজনেস বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। দোকানে বা শপিং মলে না গিয়ে, নিজের পছন্দ মত পণ্য ঘরে বসে কিনতে অনেকে স্বাচ্ছ্যন্দবোধ করে। এতে সময় এবং শ্রম বেচে যায়। ই-কমার্স বিজনেসের জনপ্রিয়তার এটি অন্যতম কারণ।

যেভাবে শুরু করবেনঃ

আপনি যদি নতু্ন উদ্যোক্তা হিসাবে ই-কমার্স বিজনেস শুরু করতে চান, প্রথমে আপনাকে পণ্য নির্বাচন করতে হবে। যে পণ্য খুব সহজে আপনি ক্রেতার নিকট পৌঁছে দিতে পারবেন, সেই ধরনের পণ্য নিয়ে ই-কমার্স বিজনেস শুরু করতে পারেন। পণ্য বিক্রয়ের ক্ষেত্রে অনলাইন ক্রেতার চাহিদার কথা বিবেচনা করতে হবে। যারা অনলাইনের মাধ্যমে অর্ডার করে পণ্য কিনবে, তারা কি ধরনের পণ্য কিনতে আগ্রহী সেই বিষয়ে খেয়াল রেখে পণ্য নির্বাচন করতে হবে। এছাড়া আপনি যদি কোন পণ্য বিক্রয় বা সরবরাহ করে থাকেন তাহলে আপনার পণ্য নিয়েই ই-কমার্স বিজনেস শুরু করতে পারেন।

যা যা প্রয়োজনঃ

ই-কমার্স বিজনেস শুরু করতে হলে প্রথমে কোম্পানির জন্য ভাল একটি নাম পছন্দ করতে হবে এবং নামের সাথে মিল রেখে একটা ডোমেইন কিনতে হবে। অনলাইনে পণ্য বিক্রয় করার মূল শর্ত হল ওয়েবসাইট থাকা। আপনার পণ্যগুলো ছবি সহ বর্ণনা করে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। যেখানে আপনার সকল পণ্যের দাম উল্লেখ থাকবে। পণ্য বাছাইয়ের মাধ্যমে সহজে ক্রয়ের ব্যবস্থা থাকতে হবে। যে কোন প্রয়োজনে তাৎক্ষনিক ক্রেতাদের সহায়তা দেবার ব্যবস্থা থাকতে হবে।

পেমেন্ট ওয়ে বা টাকা পরিশোধের মাধ্যমঃ

 

ক্রেতাদের জন্য পণ্যের দাম পরিশোধের মাধ্যমটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কয়েকটা উপায়ে পণ্যের দাম আপনি গ্রহণ করতে পারেন। বাংলাদেশে বর্তমানে পে অন ডেলিভারি/ক্যাশ অন ডেলিভারি ব্যবস্থাটা খুব জনপ্রিয়। এক্ষেত্রে পণ্য হাতে পেয়ে ক্রেতারা টাকা পরিশোধ করবে। এছাড়া অন্যান্য পেমেন্ট মাধ্যমেও টাকা গ্রহণ করতে পারেন। মোবাইল ব্যাংক বা সরাসরি ব্যাংকের মাধ্যমে অগ্রিম টাকা গ্রহণ করেও পণ্য পাঠাতে পারেন।

ক্রেতার কাছে যে ভাবে পণ্য পৌছাবেনঃ

 

ক্রেতার কাছে নিরাপদে পণ্য পৌঁছানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একজন ক্রেতা পণ্য অর্ডার করার পর, যত দ্রুত আপনি পণ্যটি তার কাছে পৌঁছাতে পারবেন আপনার ব্যবসার জন্য তত সুফল বয়ে আনবে। তাই পণ্য সরবরাহের বিষয়টি আপনাকে সব থেকে বেশি খেয়াল রাখতে হবে। আপনি ক্রেতার কাছে কয়েকটি উপায়ে পণ্য পাঠাতে পারেন।

১) নিজস্ব পরিবহনের ব্যবস্থার মাধ্যমে
২) থার্ড পার্টি কুরিয়ারের মাধ্যমে
৩) ই-কমার্স পণ্য সরবরাহকারীদের মাধ্যমে।

ই-কমার্স বিজনেসের শুরুতে থার্ড পার্টি কুরিয়ার ব্যবহার করতে পারেন। এক্ষেত্রে কুরিয়ার কোম্পানিদের সাথে আগে থেকে চুক্তি করে নেয়া ভাল।

প্রচারই প্রসারঃ

প্রথম অবস্থায় যখন আপনি ই-কমার্স বিজনেস শুরু করবেন তখন আপনার কোনো ক্রেতা থাকবে না। এক্ষেত্রে আপনাকে বিজ্ঞাপন দিতে হবে। অনলাইন, অফলাইন উভয় ক্ষেত্রে আপনাকে বিজ্ঞাপন দিতে হবে। অনলাইনে বিজ্ঞাপনের জন্য আপনি ফেসবুক, গুগল এডওয়ার্ড, নিউজসাইট বা জনপ্রিয় বিভিন্ন ব্লগে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন। এছাড়া অফলাইনেও প্রচার করতে হবে। যত বেশি গ্রাহকের কাছে আপনি পৌঁছাতে পারবেন আপনার পণ্যের বিক্রয় তত বেশি বেড়ে যাবে।

ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য পরামর্শঃ

ই-কমার্স বিজনেস শুরু করতে হলে মোটামুটি ভাল অংকের টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। তাই ই-কমার্স বিজনেস শুরু করা আগে বিষয়টা ভাল করে ভেবে নিবেন। মার্কেট রিসার্স করে গ্রাহকদের মতামত বিবেচনা করে পণ্য নির্বাচন করা যুক্তিযুক্ত হবে। আপনি চাইলে কম খরচেও ই-কমার্স বিজনেস শুরু করতে পারেন। কিছু কিছু কোম্পানি আছে যারা ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের পণ্য সরবরাহ করে থাকে। এজন্য আপনাকে অনেক পণ্য স্টক করে রাখার প্রয়োজন হবে না। বর্তমানে বাংলাদেশে কিছু কুরিয়ার আছে যারা ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের পণ্য সরবরাহ করতে সহায়তা করে। এছাড়াও একটা ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করতে ৫০,০০০/- টাকা থেকে শুরু করে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। তাই প্রথমে ফেসবুক এপসের মাধ্যমে অনলাইন শপ তৈরি করে ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

বর্তমানে বাংলাদেশে ই-কমার্স খুব চ্যালেঞ্জিং একটা বিজনেস। ই-কমার্স বিজনেসে পণ্যের মান নিশ্চিত করা সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি ভাল মানের পণ্য সরবরাহ করেন তাহলে আপনার ক্রেতাদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে। এছাড়া পণ্যের দাম পরিশোধ ও সরবরাহের বিষয়ে যথেষ্ট খেয়াল রাখতে হবে। প্রতিনিয়ত প্রচার এবং প্রসারের মাধ্যমে আপনার ই-কমার্স কোম্পানিটি জনপ্রিয় করে তোলার চেষ্টা করতে হবে।

আরও কিছু জানার থাকলে বা হেল্প এর প্রয়োজন পরলে আমাকে ফেসবুকে নক করতে পারেন। থাঙ্কস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *